আমার হৃদয় তো সেই কবিতার তারিফ করে, যার মাঝে আছে সৃষ্টিকর্তার কীর্তন। আমি তো সেই পরাক্রমাশালী স্রষ্টা প্রেমের কবিতা লিখি, যিনি অতিশয় মেহেরবান। কবিতা তো অনেকেই লিখে, তবে সেই কবিতা আমার কবিতার মতো নয়! আমার কবিতা কেবল তারঁই প্রেম-মহত্বের গুণবর্ণনায় নিবেদিত; যার হাতে আমার প্রাণ। হৃদয় উদ্যানে কেবল তাঁরই কলবর। সেই প্রজ্ঞাময় রাজ্যাধিপতির নামে শুরু করেছি একটি ইসলামিক কবিতা সিরিজ।
এই আর্টিকেলে যা যা থাকছে -
Toggle(১) ইসলামিক কবিতা | আমি দুর্বল!
আমার ক্ষুদ্র হৃদয়ে করুণার দ্বারা
দাও হে তোমার ভীতি
আমি যেনো প্রভু খুব সহজেই
মানি দ্বীনের নীতি।
আমি যে অধম অর নরাধম
রোদন করি যে তাই
তুমি তো প্রভু অতি দয়ালু
তোমারই দয়া চাই!
আমায় ঠেলে দিও না নরকের দ্বারে
দোজখের হুতাশনে
আমি দুর্বল ক্ষমা করে দাও
তোমার আপন গুণে।
মহা বিশ্বের অধিপতি তুমি
পরাক্রমশালী,অক্ষয়
আমার মোনাজাত কর হে কবুল
শোনো এই অনুনয়!
আরও পড়ুনঃ ১০টি নতুন ইসলামী গজলের লিরিক্স
(২) ইসলামিক কবিতা | মিনতি
দেখ প্রভু দুনিয়ায় অনাদরে কত ভাই
পথশিশু, বিধবার কান্না
সালওয়া দাও আজও অভাবের সংসারে
আবার পাঠাও সেই মান্না।
যেন হাজার মানুষ বাঁচে সেই খানা আহারে
ক্রন্দনে বুক ভাসা, আজ হাসি মুখে থাক
মাজলুম, ক্রীতদাস দুখেরই নির্বাসে
এই দুনিয়ায় স্বর্গের সুখটুকু পাক।
অনেক মানুষ আছে আমাদের আশেপাশে
যাদের গোনা যায় পাজরের হাড়
অনাথের শ ‘অভাব সবগুলো মুছে দাও
দয়া কর তুমি প্রভু, কর বারবার।
ধনাঢ্যশালীদের মনটাকে করে দাও
সাগরের চেয়ে প্রভু বেশি উদার
এতিমের প্রতি যেন সবার নজর থাকে
এই মিনতি করি তব দরবার।
আরও পড়ুনঃ সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য উদাহরণ সহ
(৩) ইসলামিক কবিতা | অনাদি
তুমি পবিত্র অনাদি অসীম
মহিমায় বলিয়ান,
অতল ভুবনে তুলনা তোমার
তুমিই হে মহিয়ান।
দয়াময় তুমি বিধান দাতা
নতুনই তব ধ্যান,
আকাশ বাতাস লওহে কলম
সবই তোমার জ্ঞান।
জগ সৃষ্টির স্রষ্টা তুমি
দাতা মাখলুকাতের,
আরশে আজীম তোমার আসন
তুমি মালিক জান্নাতের।
দুনিয়া তোমার হাতে গড়া-
সাগর পাহাড় যতো,
জ্বীন-ইনসান সৃষ্ট সবই
তোমার কাছে নত।
আরও পড়ুনঃ ঋতুরাজ বসন্তের কবিতা
(৪) ইসলামিক কবিতা | বয়ছে তুফান
রাতের আকাশে চন্দ্র হেসেছে
গগন ঢেকেছে মেঘে
শিউলি বকুল হাসনাহেনার
পাঁপড়ি উঠেছে জেগে।
ঝরছে বৃষ্টি বয়ছে তুফান
বিজলি চমকায় আলো
চাদের মুখটা সহসায় দেখি
ঢেকেছে মেঘ কালো।
একলা বসে ঘরের কোণে
কাঁথামুড়ি দিয়ে
ভাবছি বসে জানালার পাশে
শুধু তোমায় নিয়ে।
হাসনাহেনা ছড়ালো সুবাস
দখিনা সমীরণে
মুগ্ধ হয়ে হেঁকেছি ভজন
প্রভু তোমার শানে।
আরও পড়ুনঃ ক্রিয়াপদ কাকে বলে? ক্রিয়াপদ কত প্রকার ও কি কি?
(৫) ইসলামিক কবিতা | ঘুমন্ত বিবেকের কাছে প্রশ্ন
[ এই লেখাটি পবিত্র কুরআনের ’সূরা ত্বীন ’এর বঙ্গানোবাদ অনুসরণে।]
করছি শুরু পরম দাতা
মহা দয়ালুর নামে।
শপথ ত্বীন জয়তুনের
শপথ পর্বত সিনাইনের
এই শপথ নিরাপদ নগরীর
সৃষ্টি করেছি মানুষ সুন্দর ধীর।
অতঃপর আমি তাকে
নিচ থেকে অতি নিচে
ফিরিয়ে নিয়ে যাই,
তবে তাদেরকে নয়;-
যারা ঈমানদার ও সৎকর্ম পরায়ণ
তাদের জন্য রয়েছে পুরুস্কার বিতরণ
তবুও কোন বিষয়ে মহা-প্রলয়ের অবিশ্বাসী হন?
আল্লাহ কি বিচারকদের শ্রেষ্ঠ বিচারক নন?
আরও পড়ুনঃ মাতৃভাষা নিয়ে কবিতা
(৬) ইসলামিক কবিতা | তোমার দয়ার অথই সাগরে
তোমার পথের সন্ধান পেয়েও
চলছি বিপথে প্রভু
তবুও আমায় করছো কৃপা
বাঁচিয়ে রেখেছো তবু।
পারতে তুমি শাস্তি দিতে
আমায় না দিয়ে অন্ন
পারতে আজাব গজবে আমায়
করে দিতে বিচ্ছিন্ন।
তব দয়ার অথই সাগরে
ডুবে আছি সারাক্ষণ
নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা কভুও
করি নাই এজীবন!
তবুও বেঁচে আছি আমি
দয়া করেছো বলে
গোনাহগার চির কাঙ্গাল দীন
ক্ষমা করো এই অধমের ঋণ।
তোমার সৃষ্টি বলে।
আরও পড়ুনঃ বাংলা সমার্থক শব্দ – বাংলা প্রতিশব্দ (স্বরবর্ণ)
(৭) ইসলামিক কবিতা | পরিতাপ
প্রতি কদমের হিসেব যদি
নাও হে আমার প্রভু
এক পা এগিয়ে যাওয়ার
শক্তি নাহি কভু!
ভুলে ভুলেই চলছি সদা
মানি নাই কভু তোমার বাঁধা
চলছি কেবল শয়তানি আর
গোমরাহী কু-পথে
জানিনা, ভীম প্রলয়ে কি আচরণ
করো আমার সাথে!
তোমার ভয়ে করছে ধূনন
এই অধমের ফুরফুরে মন
তোমার কৃপার পাথার বিশাল
যার নাই কোনো সীমা,
ও প্রভু! ক্ষুদ্র আমি বান্দা তোমার
করে দাও মোরে ক্ষমা।
আরও পড়ুনঃ পবিত্র মাহে রমজান নিয়ে কবিতা
(৮) ইসলামিক কবিতা | প্রার্থনা
দিওনা কভু মর্মে আমার
মহা বড়ত্বের মনোভাব
দিও প্রভু দিও আমায়
মনোহর স্বভাব।
তবে করো না আমায়
ক্ষুদ্র মনের হীন নর
থাকে যেনো দারাজ দিল
জোরজান মৌন উদার।
সবার সাথেই যেনো
মিলে মিশে থাকি
দিও সেই সমতার
গুণশীল আঁখি।
আরও পড়ুনঃ সেরা রোমান্টিক প্রেমের কবিতা।
(৯) ইসলামিক কবিতা | পাপ মোচন কর অন্তরতর হে
পাপের মাঝেই বেঁচে আছি প্রভু বহুকাল ধরে
এ আমার দোষ, এ আমার পরাজয় জানি
তাই তোমার কুদরতি পায়ে সিজদায় নত স্বরে
তোমার গুণকীর্তণ করি, আমি পাপী অপমানি।
ক্ষমা চেয়েও শত গোনাহ করি, এ আমার দোষ
তবে কখনোই তোমার সাথে শরিক করিনি কারো
জেনে -নাজেনে রচে গেছে এ আমার পাপকোষ
আমায় ক্ষমা করো প্রভু আমায় ক্ষমা করো।
দুনিয়ার লোভে পড়ে সদা চলেছি গায়ের জোরে
এই হতভাগা অমান্য করে তব আদেশ নিষেধ
তোমার ক্ষমারই চাদরে ঢেকে নাও এ-পাপিরে
প্রভু! তব হুকুমের সাথে আমায় রেখো অভেদ।
জীবনের অনেকটা পথ কেটেছে অবাধ্যতার মাঝে
আজ সকল পাপ থেকে অব্যাহতি নিতে চাই
পরাক্রান্ত হে বর! পাপ থেকে উদ্ধার করো নিজে
আমি জানি, তুমি ছাড়া ক্ষমাকারী কেউ নাই।
শেষ ভরসাই ক্ষমার আশাই তোমার দুয়ারে আজ
মিনতির সাথে লজ্জিত শিরে নত হয়ে গেছি
পাপের জন্য আর মহা-প্রলয়ের দিনে দিওনা লাজ
যতদিন রাখবে ভূলোকে তব বাধ্যতায় যেনো বাঁচি।
লেখকের কথাঃ
পাঠক হিসেবে আমার কাছে ইসলামিক কবিতাগুলোর মান সবার উপরে। কারণ এই কবিতাগুলো তো তাঁরই নামে লেখা, যিনি আমাদের একমাত্র অভিভাবক পরাক্রমশালী আল্লাহ। তাঁর প্রেম ও মহত্বের কবিতা তো পৃথিবীর সকল কবিতার চেয়েও উত্তম কবিতা। হয়ত আমি কোন ব্যকরণ, শব্দ চয়ন, সুন্দর ছন্দমিলের গাঁথুনির সমন্বয়ে কবিতা লিখতে জানিনা। তবে আমার এই কচি হাতের লেখাগুলোই আমাকে আনন্দ দেয়, অনুপ্রেরণা দেয় এগিয়ে যাবার।
ইসলামিক কবিতা সিরিজের আজকের এই পর্বটি প্রথম। আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। এই কবিতাগুলো আপনার কাছে কেমন মনে হলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।