পল্লী গ্রাম নিয়ে কবিতা কার ভালো লাগে না! আমরা সকলেই সৌন্দর্য্যের ভক্ত। আবার তা যদি গ্রামের প্রাকৃতির সৌন্দর্য, তবে তো কথাই নেই। গ্রামের পরিবেশের ভালোবাসায় যে পরিমাণ সুখ-শান্তি ও আত্মার তৃপ্তি ঘটে, তা আর যেনো কেথাও নেই!
পল্লী গ্রামের প্রেমে পড়ে শিল্পীরা এঁকে যায় ছবি, কবিরা লিখে যায় কবিতা, গায়কেরা গেয়ে যায় গান। এই ব্লগের কবিতা গুলো তারই প্রমাণ। উল্লেখিত কবিতা গুলোতে ফুটে উঠেছে পল্লী গ্রামের দৃষ্টিনান্দন পরিবেশ ও হৃদয় কেড়ে নেওয়ার মতো দৃশ্য।
নিশ্চই আপনি এই কবিতা গুলো পড়ে গ্রামীণ পরিবেশের একটি কাল্পনীক আনন্দ পাবেন। কবিতা গুলো নাজিরুল ইসলাম নকীব- এর ২০১৪ সালের ডায়েরি থেকে নেওয়া। আশাকরি কবিতা গুলো সকল কবিতা পাঠকদের কাছে ভালোই লাগবে। চলুন শুরু করি।
আরও পড়ুনঃ ঋতুরাজ বসন্তের ১০ টি কবিতা
(১) পল্লী গ্রাম নিয়ে কবিতা
আমার বাংলাদেশ
সবুজের সমারোহ
আমার এই দেশ,
দেখি যত রূপ তার
নেই কোনো শেষ।
আমার এই দেশ
যেতো সবুজ শ্যামল,
মাঠ ভরা ধান আর-
নদী ভরা জল।
হর্ষে কৃষকেরা
মাঠে কাটে ধান,
ঘর্মাক্ত দেহে ফের
গেয়ে যায় গান।
উৎকণ্ঠিত সবে
দেশের প্রেমে
দিবস আলোর শেষে
সঁন্ধ্যা নামে।
সবুজের চাদরে
ঢাকা এই দেশ,
তার জন্যে বুকে
ভালোবাসা অশেষ।
আমার বাংলাদেশ।
আরও পড়ুনঃ মানবতার কবিতা
(২) আমাদের গ্রাম নিয়ে কবিতা
গায়ের রাখাল
আমার বাড়ির পাশের গায়ে
ছোট্ট একটা নদী,
সেই নদীতে ফুটতো কমল
ঢেউয়ে দুলতো নিরবধি।
ঐ নদীরই পাড়ে ছিল
ছোট্ট একটা ঘর,
সেই ঘরেতে থাকতো রাখাল
সঁন্ধ্যা নামার পর।
প্রভাত হলে গরু নিয়ে
যেতো শ্যামল মাঠে,
সারা দিবস কাটিয়ে দিতো
এদিক ওদিক হেটে।
রোজ বিকেলে নদীর পাড়ের
বটের ছায়ায় বসে,
কমল দেখে হাসতো রাখাল
সোনার পরিবেশে।
রাখাল একদা বাড়ি যাবে
তাই যে সেজেছে,
বোনের জন্য কমল ফুলের
মালাও বেঁধেছে।
শত কমল হাতে নিয়ে
ফিরলো গায়ের দিকে,
এই কবিতা সত্য নয়
তবু রাখতে পারো লিখে।
আরও পড়ুনঃ মহানবীকে নিয়ে কবিতা
(৩) নিজ গ্রাম নিয়ে কবিতা
গ্রামীণ জনপদে
শ্যামল বনের প্রান্তদেশে
ফুটলো বকুল হর্ষে হেসে
হিজল ঝাড়ে হাঁকে কূজন
তিমির কালো রাতের শেষে।
বর্ষা এলে নদ-নদীতে
পানির স্রোতে দু’ধার ভাসে,
শিউলি, বকুল কৃষ্ণচূড়া
ঘ্রাণ ছড়িয়ে অমনি হাসে।
সঁন্ধ্যা-প্রভাত কুহেলিতে
শিশু-বুড়ো কাঁপে শীতে,
বৈশাখী ঝড় আসলে তুফান
যাই ছুটে যাই আম কুড়াতে।
পদ্মা নদীর পদ্মা পাড়ে
কমল হাসে চতুর দ্বারে।
বক পাখিরা অন্ন খোঁজে
যায় ছুটে যায় তেপান্তরে।
রোজ বিকেলে বাজার জমে
গ্রামীণ জনপদে,
দৃশ্যটা যে কী অপরূপ!
আনন্দ পাই হৃদে।
আরও পড়ুনঃ মাতৃভাষা নিয়ে কবিতা
(৪) পল্লী গ্রাম নিয়ে কবিতা
ভাই ভাই সকলে
আমাদের ছোট নদী
ভরা বারি তার,
স্কুল শেষে মোরা যাই
নদীর ঐ পার।
করি খেলা চলে বেলা
শিশু যত আর,
স্নেহ মায়া অনুরাগ
আছে যে সবার।
মিঠাজল গোটা দল
খেলার শেষে-
পিয়ে যাই মোরা ভাই
মিলে মিশে।
কলকল নদীজল
করছে খেলা,
পড়ার সময় পড়ি
তাতে নেই অবহেলা।
ভাই ভাই সকলেই
নেই বিভাজন,
মোদের এই শিক্ষা
দেয় গুরুজন।
আরও পড়ুনঃ পবিত্র মাহে রমজান নিয়ে কবিতা
প্রিয় পাঠক, যারা গ্রামীণ পরিবেশকে ভালোবাসে তাদের হৃদয়ে সবসময় গ্রামীণ পরিবেশের বিভিন্ন দৃষ্টিনান্দন দৃশ্য ভেসে উঠে। সত্যি বলতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের কাছে কৃত্রিম সৌন্দর্য্যের তুলনা চলে না। শহরের পরিবেশ মানব সৃষ্ট। আর গ্রামের পরিবেশকে স্রষ্টা নিজ কুদরতেই সাজিয়ে তুলেছেন।
এজন্যই গ্রামের পরিবেশ দেখতে যেমন সুন্দর, ঠিক তেমনী মনোমুগ্ধকর। উল্লেখিত গ্রামের কবিতা গুলোতে তা সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। এই কবিতা গুলোকে আপনি কবিতা বা ছড়া হিসেবেও ধরে নিতে পারেন। যাইহোক, আশাকরি পল্লী গ্রাম নিয়ে কবিতা গুলো আপনাদের কাছে ভালোই লেগেছে।