ইসলামে প্রবেশ করার পর পরই সবার আগে তার উপর নামাজের হুকুম চলে আসে। নামাজ মুমিনের জন্য আবশ্যকীয় একটি ইবাদত। নামাজের মধ্যে বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। তারমধ্যে যেমন ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত, নফল ও মুস্তাহাব ইত্যাদি। আজ আমরা ওয়াজিব নামাজ সম্পর্কে জানবো।
ওয়াজিব নামাজ কাকে বলে?
ওয়াজিব (وَاجِبٌ) এর বাংলা অর্থ “কর্তব্য”, অর্থাৎ, যে কাজের উপর আমল করলে সওয়াব পাওয়া যাবে এবং না করলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে। ফরজ নামাজের পর পরই ওয়াজিব নামাজের অবস্থান।
রাসূলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘ওয়াজিব’ শব্দটি তাঁর বিভিন্ন হাদিসে উল্লেখ করেছেন এবং ওয়াজিব নামাজের প্রতি উম্মতকে অনেক বেশি উৎসাহিত করেছেন।
ওয়াজিব নামাজ কোন গুলো?
ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে ৩ টি নামাজ ওয়াজিব।
- বিতর নামাজ
- ঈদুল ফিতরের নামাজ
- ঈদুল আযহার নামাজ
বিতর নামাজ প্রতিদিন এশার নামাজের পর আদায় করতে হবে। আর ঈদুল ফিতরের নামাজ ঈদুল ফিতরের দিন এবং ঈদুল আযহার নামাজ ঈদুল আযহার দিন পড়তে হবে।
আরো পড়ুনঃ নামাজের ফরজ কয়টি ও কি কি?
মাসআলাঃ মান্নতকৃত নামাজও ওয়াজিব নামাজের অন্তর্ভূক্ত। আর প্রত্যেক নফল নামাজ শুরু করার পর তা ওয়াজিব হয়ে যায় অর্থাৎ শুরু করার পর তা শেষ করা এবং যদি কোনোক্রমে নষ্ট হয়ে যায় তবে তা পুরণায় আদায় করা আবশ্যক।
ওয়াজিব নামাজের গুরুত্ব
ওয়াজিব এর সাধারণ অর্থ ”কর্তব্য” হলেও ওয়াজিব নামাজ পড়া আবশ্যক। কারণ ওয়াজিব নামাজ বলতে এমন ধরণের নামাজকে বুঝায়, যার উপর আমল করলে সওয়াব হবে এবং ইচ্ছেকৃত ছেড়ে দিলে শাস্তি পেতে হবে।
ওয়াজিব নামাজ কয় রাকাত?
ওয়াজিব নামাজ শুধু একটিমাত্র নির্দিষ্ট নামাজ নয়; এখানে বিতর নামাজ, ঈদুল ফিতরের নামাজ এবং ঈদুল আযহার নামাজ অন্তর্ভূক্ত। আবার মান্নতের নামাজও এর অন্তর্ভূক্ত হতে পারে।
- বিতর নামাজ ৩ রাকাত
- ঈদুল ফিতরের নামাজ ২ রাকাত
- ঈদুল আযহার নামাজ ২ রাকাত
আরো পড়ুনঃ নামাজের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি?
মান্নতের নামাজ মূলত নফল নামাজকে উদ্দেশ্য করা হয়। যেমন -আমি যদি অমুখ চাকরিটি পাই, তবে ২ রাকাত, ৪ রাকাত অথবা ৬ রাকাত নফল নামাজ আদায় করবো। সুতরাং, মান্নতের নামাজ কত রাকাত হবে তা ব্যক্তির নিয়ত বা উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করবে।
সচারাচর প্রশ্নঃ
প্রশ্নঃ ওয়াজিব শব্দের অর্থ কি?
উত্তরঃ ওয়াজিব অর্থ ‘কর্তব্য’।
প্রশ্নঃ ওয়াজিব নামাজ না পড়লে কি গুনাহ হবে?
উত্তরঃ হ্যাঁ, গোনাহ হবে।
প্রশ্নঃ ফরজ ও ওয়াজিব এর পার্থক্য কি?
উত্তরঃ হানাফি ফকিরগণের মতে, যে আমলটি কুরআনের দলিলের মাধ্যমে প্রমাণিত হবে, সেটা ফরজ। আর যে আমলটি হাদিসের দলিলের মাধ্যমে প্রমাণ হবে সেটা ওয়াজিব। তবে, এই ধরণের ইবাদত পালন করার দিক দিয়ে দুটোই আবশ্যকীয়।
শেষ কথাঃ
প্রিয় পাঠক, আমি চেষ্টা করেছি ওয়াজিব নামাজ সম্পর্কে সচারাচর জিজ্ঞাসিত বিভিন্ন প্রশ্নের যথাযথ উত্তর আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার জন্য।
আশাকরি এই আর্টিকেল থেকে আপনি জানতে পেরেছেন – ওয়াজিব নামাজ কাকে বলে? ওয়াজিব নামাজ কি কি? ওয়াজিব নামাজের গুরুত্ব কেমন এবং ওয়াজিব নামাজ কয় রাকাত ইত্যাদি সহ ওয়াজিব নামাজ সম্পর্কিত আরো অনেক কিছুই।
মহান আল্লাহ আমাকে এবং আমাদের সবাইকে ওয়াজিব নামাজের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন, এবং তিনি আমাকে ও আমাদেরকে ক্ষমা করুন। আমিন।
আমরা নামাজ বিষয়ে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন নিবন্ধ প্রকাশ করেছি। আপনি চাইলে এই লিস্টটি দেখে পড়তে পারেনঃ