নামাজের নিষিদ্ধ সময় কেন? নিষিদ্ধ সময়ে নামাজ পড়লে কি হয়?

নিষিদ্ধ সময়ে নামাজ পড়লে কি হয়?
Written by IQRA Bari

মহান আল্লাহর বান্দা হিসেবে আমরা যে কোনো সময় তাঁর আনুগত্য প্রকাশে মাটিতে সিজদায় অবনত হতে পারি। কিন্তু আল্লাহ তা’আলা ৩ টি সময়ে সিজদা বা নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন। কিন্তু কেন? নিষিদ্ধ সময়ে নামাজ পড়লে কি হয়?

নামাজ তো মহান আল্লাহরই জন্য। তবুও কেন ৩ টি সময় সিজদা দেওয়াকে কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে? নামাজের নিষিদ্ধ সময় কেন আধুনিক বিজ্ঞান তার একটি গবেষণা চিত্র তুলে ধরেছেন বিশ্ববাসীর সামনে।

আজ আমি বিজ্ঞানের সেই গবেষণা থেকেই কিছু তথ্য আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবো। চলুন জেনে নেওয়া যাক নামাজের নিষিদ্ধ সময়ের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা সম্পর্কে।

নিষিদ্ধ সময়ে নামাজ পড়লে কি হয়?

প্রথমেই আমরা বিজ্ঞানের আলোকে এমন কিছু বিষয় জানার চেষ্টা করবো, যেগুলো জানার মাধ্যমেই আমরা খুঁজে বের করবো নামাজের নিষিদ্ধ সময় কেন?

এই পৃথিবীর বাহিরে যত গ্রহ, উপগ্রহ এবং নক্ষত্র রয়েছে, প্রতিটিরই একটি ম্যাগনেটিক ফিল্ড (Magnetic field) রয়েছে। এটাকে একত্রে বলা যেতে পারে কসমিক ম্যাগনেটিক ফিল্ড (Cosmic Magnetic Field)।

আমাদের এই পৃথিবীরও একটি ম্যাগনেটিক ফিল্ড রয়েছে, যেটাকে বলা হয় জিও ম্যাগনেটিক ফিল্ড (Geo magnetic field)। মানুষের দেহেরও একটি ম্যাগনেটিক ফিল্ড আছে। যেটাকে বলা হয় বায়ো ম্যাগনেটিক ফিল্ড (Bio magnetic field)।

আরো পড়ুনঃ নামাজের ফরজ কয়টি ও কি কি?

আমরা যখন সিজদার জন্য জমিনে মাথা ঠেকাই, তখন আর্থিং (Earthing) নামক একটি প্রক্রিয়া চালু হয়। আর্থ (Earth) মানে পৃথিবী, এবং আর্থিং (Earthing) মানে কোনো কিছুকে পৃথিবীর সাথে সংযোগ দেওয়া।

আমরা সকলেই জানি, বিদ্যুৎ প্রবাহের কাজে বৈদ্যুতিক একটি তারকে মাঠির সাথে আর্থিং বা সংযোগ দেওয়া হয়, ইলেকট্রন (electron) যেনো আর্থিং (Earthing) এর মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে ছড়িতে যেতে পারে।

আমরাও যখন স্রষ্টার আনুগত্য প্রকাশে সিজদার মাধ্যমে মাটিতে কপাল ঠেকাই, তখনও আর্থিং (Earthing) প্রক্রিয়ায় এনার্জি ট্রান্সফার হয়।

আমাদের কপালের ঠিক বিপরীত পার্শ অর্থাৎ মাথার পেছন দিকে মাস্তিস্কের ফ্রন্টাল লোব (frontal lobe) অবস্থিত।

ফ্রন্টাল লোব এর কাজ হচ্ছে আমাদের স্মৃতি ধারণ করা, চিন্তাশক্তি উন্নত করা, কথা বলার প্রক্রিয়া চালু রাখা ইত্যাদি সহ আরো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পাদন করে ফ্রন্টাল লোব।

মানব মস্তিস্ক এবং মানব দেহে কিছু পজেটিভ চার্জ এবং কিছু নেগেটিভ চার্জের উৎপত্তি হয়।

মানবদেহে যখন পজেটিভ চার্জের উৎপত্তি কম হয়, তখন মানুষ হতাশায় ভূগে এবং এই সময়ে মানব দেহের নেগেটিভ চার্জের উৎপত্তি বেড়ে যায়।

আরো পড়ুনঃ নামাজের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি?

মানুষ যখন মাটিতে সিজদার মাধ্যমে মাথা ঠেকায়, তখন সিজদাকারীর শরীরের বায়ো ম্যাগনেটিক ফিল্ড (Bio magnetic field) পৃথিবীর জিও ম্যাগনেটিক ফিল্ড (Geo magnetic field) এর সাথে আর্থিং (Earthing) কানেকশন তৈরি করে।

আর এই আর্থিং (Earthing) কানেকশনের মাধ্যমে মানব মস্তিকের নেগেটিভ এনার্জিগুলো পৃথিবী শোষণ করে নেয় এবং পৃথিবী থেকে কিছু পজেটিভ এনার্জি মানব মস্তিকে প্রবেশ করে।

নামাজের নিষিদ্ধ সময় কেন, চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক।

নিষিদ্ধ সময়ে নামাজ পড়লে কি হয়?

নামাজের নিষিদ্ধ সময়ে সূর্য পৃথিবীর এমন একটি পজিশনে অবস্থান করে, যেই সময়টাতে কসমিক ম্যাগনেটিক ফিল্ড (Cosmic Magnetic Field) এবং জিও ম্যাগনেটিক ফিল্ড (Geo magnetic field) এর মাধ্যমে এমন একটি ক্রিয়াকলাপ ঘটে, এই সময়টাতে যদি মানুষের কপাল মাটিতে স্পর্শ করে তখন মানব দেহের বায়ো ম্যাগনেটিক ফিল্ড (Bio magnetic field) এর উপর একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

অর্থাৎ, এই সময় গুলোতে মানুষ সিজদা করলে মানব মস্তিস্ক থেকে পজেটিভ বা ভালো এনার্জি গুলো পৃথিবী শোষণ করে নেয় এবং বিপরীতে পৃথিবীর নেগেটিভ বা খারাপ এনার্জিগুলো মানব মস্তিস্কে প্রবেশ করে। যা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

আরো পড়ুনঃ নামাজে একই সূরা দুই রাকাতে পড়ার মাসআলা

  • মানব মস্তিস্ক থেকে পজেটিভ এনার্জি কমে গিয়ে যদি নেগেটিভ এনার্জিতে পূর্ণ হয়, তখন মানুষ মানসিক ভাবে হতাশা বা ডিপ্রেরশ ফিল করে। এবং মাথা অনেক ভারি মনে হয়।
  • বিপরীতে মানব মস্তিস্ক থেকে নেগেটিভ এনার্জি কমে গিয়ে যদি পজেটিভ এনার্জিতে পূর্ণ হয়, তখন মানুষ মনসিক ভাবে সুস্থ্যতা ও প্রফুল্লতা অনুভব করে। তাছাড়া মনে প্রশান্তি অনুভব হয়।

মহান আল্লাহর ভাষ্যমতে, আমাদের সকল ইবাদতই আমরা নিজের উপকারের জন্যই করি। নামাজও তারমধ্যে একটি ইবাদত।

একটি সিজদার মাধ্যমে আড়ালে কতকিছু ঘটে যায়, তা আমরা কখনই ভাবিনি। মহান আল্লাহই যেহেতু আমাদের স্রষ্টা, তিনিই সবচেয়ে ভালো জানেন মানুষের জন্য কোনটা উপকারী এবং কোনটা ক্ষতিকর।

নামাজের নিষিদ্ধ সময় গুলো তার একটি সুস্পষ্ট প্রমাণ। সুতরাং, মহান আল্লাহ নামাজের জন্য যেই সময়গুলোকে নিষিদ্ধ করেছেন, অবশ্যই আমাদেরকে তা থেকে বিরত থাকতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক ভাবে বুঝা তাওফিক দিন। আমিন।

Leave a Comment

error: Content is protected !!