মুমিন জীবনে রমজানের গুরুত্ব অপরসীম। রমজানকে বলা হয় পূণ্য হাসিলের বসন্ত। রমজান হলো আরবি মাসের ৯ম মাসের নাম। রমজানের তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা – রমজানের প্রথম ১০ দিন নাজাতের, দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফিরাতের এবং তৃতীয় ১০ দিন জাহান্নাম থেকে মুক্তির। রোজা রেখে কি কি করা যাবে না এই বিষয়ে অবশ্যই আপনাকে জানা জরুরি।
মুমিনদের মধ্যহতে প্রাপ্ত বয়স্ক সকল নর-নারীর উপর রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে। বিশ্বের কোটি কোটি মুসলিম স্রষ্টার এই আদেশ পালনে রমজানের রোজা পালন করে। কিন্তু রোজা অবস্থায় এমন কিছু কাজ আছে যা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। নাহয় রোজার হক পরিপূর্ণ হবে না। আবার কিছু কিছু কাজের দ্বারা রোজা ভেঙেও যায়।
আরও পড়ুনঃ রোজা রেখে গান শোনা যাবে কি?
রোজা অবস্থায় যেসব কাজ করা যাবে না কুরআন -হাদিসের আলোকে তার একটি লিষ্ট তৈরি করেছি। প্রত্যেক রোজাদারকেই এই বিষয়গুলো জানার পর অবশ্যই মেনে চলা উচিত।
রোজা রেখে কি কি করা যাবে না?
মহাগ্রন্থ আল কুরআনের সূরা বাকারার ১৮৭ নম্বর আয়াতের মাধ্যমে রোজার সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। যেমন আল্লাহ বলেন, ”তোমরা সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত পানাহার করো, অতঃপর রাত আসার আগ পর্যন্ত রোজা পালন করো।”
রোজা রাখার এই সময়টাতে অনেক বিষয় আছে, যা ইসলামি শরিয়তে নিষিদ্ধ বা হারাম করা হয়েছে। এমনই কিছু হারাম বিষয় নিচে তুলে ধরা হয়েছে, যা রোজা অবস্থায় করা যাবে না।
(১) সাহরি থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
(২) স্ত্রীসম্ভোগ করা যাবে না।
(৩) মুখ দ্বারা ওষুধ সেবন করা যাবে না।
(৪) কান, নাক ও মলদার দ্বারাও ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না।
আরও পড়ুনঃ রোজার সুন্নত কয়টি ও কি কি?
(৫) সুবহে সাদিকের পর অথবা সাহরির সময়সীমা পেরিয়ে গেলে খাওয়া দাওয়া করা যাবে না।
(৬) দাঁত থেকে বের হওয়া রক্ত বা রক্ত মিশ্রিত থুতু গিলা যাবে না।
(৭) ধুমপান করা যাবে না।
(৮) ইচ্ছাকৃতভাবে আগরবাতি বা কয়েল জাতীয় কোনো কিছুর ধোঁয়া গলার ভেতরে প্রবশে করানো যাবে না।
(৯) ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ ভরে বমি করা যাবে না।
(১০) টুথপেস্ট ও মাজন ব্যবহার করে দাঁত পরিস্কার করা অনুচিত। তবে মেসওয়াক করা যেতে পারে।
(১১) পরনিন্দা বা গীবত করা যাবে না।
(১২) মিথ্যা কথা বলা যাবে না।
(১৩) মুখে অশ্লীল বাক্য উচ্চারণ করা যাবে না।
(১৪) গান শোনা যাবে না।
আরও পড়ুনঃ রমজানের ৩০ রোজার ফজিলত
(১৫) মুভি, নাটক, সিনেমা দেখা থেকে বিরত থাকা জরুরি।
(১৬) পুকুরে বা নদীর পানিতে ডুব দিয়ে গোসল করা অনুচিত।
মোটকথা হলো, রোজা রাখা অবস্থায় সকল প্রকার পানাহার, কামাচার, অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। এমনকি রোজা অবস্থায় এমন কোনো কাজ করা যাবে না, যেই কাজের দ্বারা রোজার ক্ষতি হয়।
আশাকরি রোজা রেখে কি কি করা যাবে না এই বিষয়ে আপনারা সুস্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন। পরিশেষে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি আমাদের সবার রোজাগুলোকে ত্রুটিমুক্ত করে তার সন্তুষ্টি অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।