কোন দেশে সহজে স্কলারশিপ পাওয়া যায়? জেনে নিন

কোন দেশে সহজে স্কলারশিপ পাওয়া যায়?
Written by IQRA Bari

শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় সবাই বিদেশে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রধান বাধা হয়ে দাড়ায় আর্থিক অসচ্চলতা। এমন হাজারো শিক্ষার্থীর জন্য স্কলারশিপ হলো সেই কাঙ্ক্ষিত সোনার হরিণ, যা এই স্বপ্নকে সত্যি করতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এত এত দেশের মধ্যে কোন দেশে সহজে স্কলারশিপ পাওয়া যায়?

আমরা জানি, আমেরিকা বা যুক্তরাজ্যের মতো জায়গায় স্কলারশিপ পাওয়াটা কতটা কঠিন। তাই আজকের এই বিস্তারিত ব্লগ পোস্টে আমরা এমন কিছু গন্তব্য খুঁজে বের করবো, যেখানে বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের সুযোগ তুলনামূলকভাবে বেশি এবং আবেদন প্রক্রিয়াও সহজ। এই গাইডটি আপনাকে আপনার স্বপ্নের পড়াশোনার পথে এক ধাপ এগিয়ে দেবে।

সহজে স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য সেরা ৩টি দেশ

বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের দরজাগুলো সবচেয়ে বেশি খোলা থাকে যেসব দেশে, তার মধ্যে নিচে তিনটি সেরা তিনটি দেশের নাম উল্লেখ করা হলো:

১. জার্মানি (Germany):

স্কলারশিপ অভিমুখী শিক্ষার্থীদের জন্য বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় গন্তব্য হচ্ছে জার্মানি,  বিশেষত স্কলারশিপের সহজলভ্যতার কারণে। এখানকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যাচেলর এবং মাস্টার্স উভয় স্তরেই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি নেই, যা এটিকে কার্যত একটি বিশাল আর্থিক সহায়তা বা স্কলারশিপের সমতুল্য করে তোলে।

তবে জীবনযাত্রার খরচ বহনের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং নির্ভরযোগ্য স্কলারশিপ হলো DAAD (Deutscher Akademischer Austauschdienst) স্কলারশিপ। DAAD বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রচুর সংখ্যক প্রোগ্রাম অফার করে, যা গবেষণা এবং একাডেমিক এক্সেলেন্সের ওপর জোর দেয়।

এই স্কলারশিপগুলোতে মাসিক উপবৃত্তি, ভ্রমণ ভাতা এবং স্বাস্থ্য বীমা কভার করা হয়। এছাড়া, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের উদ্যোগে নিজস্ব ফান্ড থেকে আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে। সুতরাং, জার্মানি কেবল টিউশন ফি-মুক্ত শিক্ষার জন্যই নয়, বরং DAAD-এর মতো সুপ্রতিষ্ঠিত স্কলারশিপের কারণেও শিক্ষার্থীদের কাছে একটি অত্যন্ত জনপ্রিয়।

২. কানাডা (Canada):

কানাডায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের সুযোগ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশটিকে উচ্চশিক্ষার জন্য একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করেছে। যদিও জীবনযাত্রার ব্যয় কিছুটা বেশি, তবে দেশটির ফেডারেল ও প্রাদেশিক সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উদারভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।

কানাডায় সহজে স্কলারশিপ পাওয়ার প্রধান উপায়গুলোর মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়-ভিত্তিক স্কলারশিপ, যা ভর্তির আবেদনের সময় মেধার ভিত্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিবেচিত হয়। এছাড়াও, ডক্টরাল (PhD) স্তরের গবেষণা প্রোগ্রামগুলোতে রিসার্চ গ্র্যান্ট বা অ্যাসিস্ট্যান্টশিপের মাধ্যমে টিউশন ফি এবং জীবনযাত্রার খরচ বহন করা সম্ভব হয়।

কানাডিয়ান সরকার, যেমন “Vanier Canada Graduate Scholarships” বা “Banting Postdoctoral Fellowships” এর মতো মর্যাদাপূর্ণ প্রোগ্রামগুলোর মাধ্যমে বিশ্বমানের মেধাবীদের আকৃষ্ট করে, যা এটিকে স্কলারশিপের জন্য একটি সুবিধাজনক দেশ হিসেবে সুপরিচিত করে দিয়েছে।

৩. অস্ট্রেলিয়া (Australia):

অস্ট্রেলিয়া উচ্চমানের শিক্ষা ও গবেষণার জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য এটি স্কলারশিপের একটি জনপ্রিয় গন্তব্য। আপনি যদি জানতে চান যে কোন দেশে সহজে স্কলারশিপ পাওয়া যায় তবে অস্ট্রেলিয়াকে আপনার প্রথম পছন্দ হিসেবে রাখতে পারেন।

অস্ট্রেলিয়ান সরকার প্রতি বছর উন্নয়নশীল দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য মর্যাদাপূর্ণ Australia Awards Scholarship (AAS) প্রদান করে, যা টিউশন ফি, থাকার খরচ এবং বিমান ভাড়াসহ সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করে। এছাড়া, পিএইচডি (PhD) শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলো Research Training Program (RTP) স্কলারশিপ।

অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, যেমন মোনাশ বা মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়, তাদের নিজস্ব আন্তর্জাতিক ছাত্র স্কলারশিপও প্রদান করে, যা সাধারণত মেধার ভিত্তিতে আংশিক বা পূর্ণ টিউশন ফি বহন করে। স্কলারশিপ পেতে হলে ভালো একাডেমিক ফলাফল আবশ্যক।

শেষ কথা:

আপনি যদি বিদেশে স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা করতে চান এবং সহজেই স্কলারশিপ পেতে চান তবে এই ব্লগে উল্লেখিত তিনটি দেশের কথা বিচেচনা করতে পারেন।

Leave a Comment