রোজা রেখে গান শোনা যাবে কি : মহিমান্বিত রমজান মাস চলমান। একজন মুমিনের কাছে এই রমজানের গুরুত্ব অনেক বেশি। মুমিন জীবনে রমজান হলো স্রষ্টার পক্ষথেকে পূণ্য অর্জনের একটি বিশেষ অফার! কিন্তু অসচেতনার দারুণ আমাদের অনেকেই আছে রোজা রাখা অবস্থায় বিভিন্ন অনর্থক কাজের সাথে জড়িত।
গান শোনাও তার মধ্যে একটি। কিন্তু প্রশ্ন হলো রোজা রাখা অবস্থায় গান শুনলে কি রোজা ভেঙে যাবে বা রোজার কোনো ক্ষতি হবে? এই বিষয়ে ইসলামী শরীয়ত কি বলে? নিশ্চই এই বিষয়ে আমাদের জানা দরকার।
প্রথমত আমাদের জানতে হবে, গান শোনার হুকুম কি? ইসলাম গানকে কিভাবে দেখে? এর একটি সহজ উত্তর হলো, যে গানের কথায় অশ্লীল বাক্য বা শিরকি কোনো বাক্য আছে, সেই গান সর্বোপরি হারাম। আবার যে গানে বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হয় সেই গানও ইসলামে হারাম।
আরও পড়ুনঃ সাহরি, রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া (আরবি -বাংলা ছবিসহ)
রোজা রেখে গান শুনলে কি হয় এই ব্যাপারেই কুরআন -হাদিসের আলোকে বিস্তারিত আলোচনা নিচে উপস্থাপন করা হলো।
রোজা রেখে গান শোনা যাবে কি?
রোজা রাখার মানে হলো সকল প্রকার অন্যায়, পানাহার, পাপাচার, কামাচার এবং অনর্থক কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা। যদি কেউ রোজা রাখা অবস্থাতেও এই কাজগুলো ছাড়তে না পারে, তবে তার রোজা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
গান বলতে সাধারণত বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার সম্মিলিত কোনো কন্ঠসঙ্গীতকেই বুঝানো হয়। ইসলামে যেহেতু বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার স্পষ্টত হারাম, সেহেতু রোজা রাখা অবস্থায় এমন কোনো গান শোনা যাবে না যেই গানে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার হয়েছে।
যদি কোনো গানের কথা গুলো সুন্দর হয়, এবং তাতে যদি কোনো অশ্লীল বাক্য বা শিরকি কোনো বাক্য না থাকে তবে আপনি বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার ছাড়া অর্থাৎ খালি গলায় এই ধরণের গান গাইতে পারেন। এই ব্যাপারে ইসলামী শরীয়তে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
যেই গান শোনা যাবে
কন্ঠসঙ্গীত এর অপর নাম গান, গজল, হামদ, নাত, নাশিদ ইত্যাদি। কিছু কিছু গান আছে, যেই গান আপনি গাইতেও পারবেন এবং শুনতেও পারবেন। যেমন –
- স্রষ্টার হামদ। অর্থাৎ, যেই গানে স্রষ্টার মহত্বের বর্ণনা রয়েছে।
- রাসূল (সা.) এর নাত। অর্থাৎ, সেই গানে রাসূল প্রেমের কথা রয়েছে।
- গজল বা নাশিদ। অর্থাৎ যেই গানে ইসলাম, মানবতা, দেশপ্রেম ও কল্যাণের কথা রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ রোজার ফরজ কয়টি ও কি কি? (শর্ত, উদ্দেশ্য ও উপকারিতা)
উপরোক্ত গান গুলো আপনি রোজা রাখা অবস্থায় অবশ্যই শুনতে পারবেন। তবে শর্ত হলো বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার করা যাবে না।
শেষ কথাঃ
প্রিয় পাঠক! রোজা এমনই একটি ইবাদত, যার পুরুষ্কার স্রষ্টা নিজেই প্রদান করবেন। রোজার মূল উদ্দেশ্যই হলো আত্মশুদ্ধি। রোজার মাধ্যমে বান্দা এমন কিছু কল্যাণ পায়, যা সাধারণত অন্য ইবাদতে পায় না। এজন্য রোজার পুরুস্কারও ব্যক্তিক্রম।
মনে রাখবেন, রোজা রেখে গান শোনা যাবে না। এটা একটি অহেতুক ও গুনাহের কাজ। আর এই কাজের মাধ্যমে স্রষ্টা রাগান্বিত হন। যাইহোক, রোজা রেখে কী গান শোনা যাবে ব্লগটি পড়ে নিশ্চই এই ব্যাপারে উপলব্ধি করতে পেরেছেন ।